মিলের অন্বয় ব্যতিরেকি পদ্ধতি উত্তর
উত্তর:- মিল অন্বয় ব্যতিরেকি পদ্ধতির সুত্রটিতে এই ভাবে ব্যাক্ত করেছেন , " আলোচ্য ঘটনা টি উপস্থিত আছে এরূপ দুই বা ততোধিক দৃষ্টান্তে যদি কেবলমাত্র একটি ঘটনা সব সময়ই উপস্থিত থাকে এবং আলোচ্য ঘটনা টি উপস্থিত থাকে । তাহলে যে ঘটনাটির জন্য এই দুই শ্রেণীর দৃষ্টান্তের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায় সেই ঘটনাটি হয় আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারন বা কারনের অপরিহার্য অংশ ।
[ ] মিল পদ ও সূত্রটিকে এই ভাবে ব্যাখা করা যায় । পর্যবেক্ষণের পাওয়া কতক গুলো দৃষ্টান্তে একটি ঘটনা উপস্থিত থাকলে যদি দেখা যায় যে , এই সব দৃষ্টান্তে অন্য একটি ঘটনাও উপস্থিত রয়েছে এবং যদি পূর্বের ঘটনাটি অনুপস্থিত থাকে । আমরা অনুমান করতে পারি যে এই দুটি ঘটনার কার্য কারন সম্পর্ক আছে ।
[ ] এই পদ্ধতিকে অন্বয় ব্যতিরেকি বলা হয় । কারন এক্ষেত্রে সাদৃশ্য এবং বৈসাদৃশ্য উভয় বর্তমান সদর্থক দৃষ্টান্তে গুচ্ছের দিক থেকে এই পদ্ধতি হল অন্বয় ব্যতিরেকি পদ্ধতি ।
সদর্থক ও নর্থক দুই রকমের উদাহরন আছে বলে এই পদ্ধতি কে অনেকটা ব্যতিরেকি পদ্ধতি বলা যায় ।
সাংকেতিক উদাহরণ:-
সদর্থক দৃষ্টান্ত | নর্থক দৃষ্টান্ত |
---|
পূর্ববর্তী ঘটনা | অনুবর্তী ঘটনা | পূর্ববতী | অনুবর্তী |
---|---|---|---|
ABC | abc | BCD | bcd |
ACD | acd | DEF | def |
ADE | ade | EFG | efg |
:· A হল a এর কারন |
এক্ষেত্রে সদর্থক দৃষ্টান্তে গুচ্ছে দেখা যায় যে, পূর্ববর্তী ঘটনার মধ্যে A এবং অনুবর্তী ঘটনার মধ্যে a সব সময় এক সঙ্গে উপস্থিত আছে । আবার নর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ দেখা যায় যে পূর্ববর্তী ঘটনার মধ্যে A এবং অনুবর্তী ঘটনা a সব সময় এক সঙ্গে অনুপস্থিত আছে , কাজেই সদর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ দুটি ঘটনার অনুপস্থিতর সাদৃশ্য দেখে অনুমান করা যায় যে ,A হল a এর কারন ।
বাস্তব উদাহরণ :–
১) যখনই সৌরভ ভারতীয় দলের হয়ে খেলে তখনই ভারত জয়লাভ করে । আবার সৌরভ যখনই ভারতীয় দলে অনুপস্থিত থাকে তখনই ভারত পরাজিত হয় । সুতরাং সৌরভের উপস্থিত হল ভারতীয় দলের সাফল্যের কারন ।
২) যেখানে যেখানে ম্যালেরিয়া সেখানে সেখানে মশার কামড় । আবার যেখানে যেখানে ম্যালেরিয়া নেই সেখানে সেখানে মশার কামড় নেই । অতএব মশার কামড়ই ম্যালেরিয়ার কারন ।
সুবিধা :–
১) এই পদ্ধতির প্রয়োগের ক্ষেত্র খুবই ব্যাপক । যেসব ক্ষেত্রে পরিমাণ সম্ভব নয় সেইসব ক্ষেত্রে এই পদ্ধতির প্রয়োগ করা যায় না ।
২) এই পদ্ধতির সাহায্য আমরা কার্য থেকে কারনে এবং কারন থেকে কার্যে অগ্রসর হতে পারি ।
৩) এই পদ্ধতির সাহায্য যে সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় তা বহুকারন সম্ভবনা থেকে অনেকাংশে মুক্ত ।
৪) এই পদ্ধতির সদর্থক ও নর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছের সাহায্য দুটি ঘটনার মধ্যে কার্য কারন সম্পর্ক স্থাপন করে । এই কারনে এই পদ্ধতিকে অন্বয় ব্যতিরেকি পদ্ধতির পরিবর্তিত উন্নত রূপে বলা হয় ।
অসুবিধা :–
১) এই পদ্ধতির পর্যবেক্ষণের উপর নির্ভরশীল বলে পর্যবেক্ষণের দোষ ( অপর্যবেক্ষণ দোষ ) দেখা দেবার সম্ভবনা থাকে ।
২) এই পদ্ধতিকে কার্য কারন কে সহ অবস্থান থেকে পৃথক করতে পারে না । দুটি ঘটনা সব সময় এক সঙ্গে উপস্থিত থাকলেই তাদের মধ্যে কার্য কারন সম্পর্ক থাকবে এই কথা কখনই সুনিশ্চিত ভাবে বলা যাবে না ।
৩) এই পদ্ধতির নর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ কে সংগ্রহ করা খবুই কষ্ট সাধ্য ও শ্রম সাপেক্ষ
।
৪) পর্যবেক্ষণের উপর নির্ভরশীল হওয়ার জন্য এই পদ্ধতি কেবলমাত্র কার্য কারন সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয় কিন্তু নিশ্চিত ভাবে প্রমাণ করতে পারে না ।
No comments